লোহাগাড়া প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বায় অবৈধ বালুভর্তি ডাম্প ট্রাক চলাচলের কারণে একটি গ্রামীণ সড়কের প্রায় ৬ কিলোমিটার অংশে বড়-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কটি বর্তমানে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে রয়েছে কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ ২ শতাধিক পরিবার। এ সড়কে সৃষ্ট বড়-বড় গর্তের কারণে ডেলিভারি রোগী নিয়ে হাসপাতালেও যেতে পারেনা এখানকার বাসিন্দারা। এছাড়াও কৃষি নির্ভর এ এলাকায় উৎপাদিত ফসল গুলো বাজারজাত করতে সমস্যার সম্মুখীন হন এখানকার কৃষকেরা।
শনিবার (১১ অক্টোবর) সরজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা মিলে চরম্বা ইউনিয়নের ৭ নাম্বার ওয়ার্ডের উলুবনিয়া নামক এলাকায় জামছড়ি খালের কয়েকটি স্পট থেকে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে লক্ষাধিক ঘনফুট অবৈধ বালু স্তূপ করে রাখা হয়েছে। এসব বালু পাচার করা হচ্ছে ২ নাম্বার ওয়ার্ডের বাইয়ার পাড়া থেকে হাতির-ঢেড়া সংযোগের কাঁচা সড়কটি দিয়ে। দীর্ঘদিন ধরে এ সড়ক দিয়ে বালুভর্তি ডাম্পট্রাক চলাচলের কারণে সড়কটির প্রায় ৬ কিলোমিটার অংশ বর্তমানে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় রায়হান নামক এক যুবক জানান, ২ নাম্বার ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শওকত এবং ৮/১০ জনের একটি প্রভাবশালী মহল জোরপূর্বক এ সড়ক দিয়ে বালু গুলো পাচার করে যাচ্ছে। বাঁধা দিলে মারধর ও হুমকির শিকার হন স্থানীয়রা। এদের ভয়ে প্রতিবাদও করতে পারছেনা কেউ। তাই সড়কের এমন ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহিলা জানান, আমরা যদি এখন তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলি তাহলে আমাদের এলাকা ছাড়া করবে এবং মারধর করবে প্রভাবশালী বালু খেকোরা।
কৃষক নুরুল আলমসহ কয়েকজন কৃষক জানান, কৃষি কাজ করেই জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন তারা, কিন্তু সড়কে গাড়ি না ঢুকার কারণে তাদের এই উৎপাদিত ফসল গুলো বাজারজাত করতে পারছেন না তারা।
অবৈধভাবে বালু পাচারের বিষয়ে ইউপি সদস্য শওকত জানান, গত তিনমাস আগে উপজেলা প্রশাসন থেকে ১৫ দিন মেয়াদে বালু গুলো নিলামে ক্রয় করেন তারা। কিন্তু বর্ষার কারণে এতদিন বালু গুলো নিয়ে আসতে পারেননি। সেখানে শুধু তিনি নয়! আরো অনেকেই রয়েছে। স্থানীয়দের হুমকি ও মারধরের চেষ্টার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তুমি কি ডিসি নাকি? তোমাকে কেন বলতে হবে? তুমি কে? সরজমিন এসে প্রমাণ করতে হবে। আমি এলাকার নির্বাচিত মেম্বার, এমন হুঙ্কার দিয়ে মোবাইল ফোন রেখে দেন তিনি।
চরম্বা ইউনিয়ন পরিষদের (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান সৈয়দ হোসেন জানান, কিছুদিন আগে বিষয়টি স্থানীয়রা তাকে জানালে ভাঙন অংশ গুলো সংস্কার করে দেন তিনি। এরপর কি হয়েছে তিনি অবগত নয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: সাইফুল ইসলাম জানান, সড়কটির বিষয়ে খবর পেয়েছি, কিন্তু ওখানে যেহেতু মেম্বারের নাম আসতেছে সেটা সরজমিন পরিদর্শন করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।