নেজাম উদ্দিন রানা রাউজান (চট্টগ্রাম)প্রতিনিধি:চট্টগ্রামের রাউজানের ১৩ নং নোয়াপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব কচুখাইন মুহাম্মদীয়া দরবার শরীফ এলাকায় সামাজিক কবরস্থানের জায়গা সংকুলান না হওয়ায় দেড় হাজার পরিবারের কবরস্থান সম্প্রসারণকে পুকুর ভরাট বলে চালিয়ে দিয়ে পরিবেশ আইনে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার ও হয়রানির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন এবং মানববন্ধন করেছে হাজারও গ্রামবাসি।
১৭ আগস্ট রোববার দুপুরে স্থানীয় মাঠে আয়োজিত মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলনে গ্রামবাসি তাঁদের বক্তব্য বলেন, পুকুর পাড়ের পুরনো কবরস্থানে স্থান সংকুলানের কারণে একটা কবরের উপর একাধিক কবর হয়ে গেছে। ভরাট করতে করতে সীমানা প্রাচীরের উপর চলে গেছে কবরস্থানের মাটি। দীর্ঘদিন ধরে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় কোনো ব্যক্তি মারা গেলে মৃত ব্যক্তিকে কবর দেয়ার জায়গা না থাকায় গত ২০২৩ সালে সমাজের সকল বাসিন্দা ও পুকুর মালিক পক্ষ গণের সম্মতিতে কবরস্থানের পাশের পুকুর পাড়ের অংশ ভরাটের উদ্যোগ নেন গ্রামবাসি। সম্প্রসারিত কবরস্থানের অংশে ১০ থেকে ১৫ জনের লাশ ইতিমধ্যে দাফন করা হয়েছে। কিন্তু এলাকার সামাজিক কার্যক্রম বিরোধীরা কবরস্থান সম্প্রসারণকে পুকুর ভরাট বলে চালিয়ে দিয়ে সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরী এবং মামলা করে নিরহ ৫ গ্রামবাসিকে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন। এই মামলার প্রতিবাদ এবং প্রত্যাহার চেয়ে অবিলম্বে সামাজিক স্বার্থ রক্ষায় জেলে যাওয়া ৫ গ্রামবাসিকে মুক্তি দেওয়ার দাবী জানানো হয় কর্মসূচী থেকে।
গ্রামবাসি তাঁদের বক্তব্যে আরো বলেন, মৃত মানুষের শেষ বিদায়ের প্রয়োজনে কবরস্থানের সংকুলান না হওয়ায় কবস্থানের জায়গা বৃদ্ধি করার জন্য এ ভরাট কাজ করা হয়। এই সামাজিক কাজের জন্য যদি নিরহ মানুষকে জেলে যেতে হয় তাহলে এরচেয়ে লজ্জাজনক বিষয় আর কিছু হতে পারেনা। এবং পরিবেশ অধিদপ্তর কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সমাজ ও মানুষের লাশের শেষ ঠিকানার প্রয়োজনের কথা ভেবে এই মামলা প্রত্যাহার করার দাবী জানানো হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।
সংবাদ সম্মেলনে গ্রামবাসির পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ব্যবসায়ী আজম হোসাইন। বক্তব্য দেন স্থানীয় মুহাম্মদীয়া দরবার শরীফের শাহজাহাদা মোহাম্মদ হোসাইন শাহ, মেঘনা ব্যাংক শাখা ব্যবস্থাপক মুহাম্মদ বেলাল, সমাজসেবক খায়েজ আহমদ, আনিসুর রহমান, ব্যবসায়ি মোহাম্মদ মোতালেব, জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আজম হোসাইন বলেন, গত ২০২৩ সালে বর্ণিত পরিত্যাক্ত জলাশয় সংস্কার করে কবরস্থান সম্প্রাসারনকালে কয়েকজন ব্যক্তি পরিবেশ অধিদপ্তরে এলাকার কয়েকজন সমাজ প্রতিনিধির বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে অভিযোগ করেন। তাতে অভিযুক্ত করা হয় খোরশেদ ইসলাম, মোঃ শাহেদুল ইসলাম, জামাল উদ্দিন, মোঃ আলী আকবর, মকবুল আহম্মদ, খোরশেদ আলম। প্রকৃত পক্ষে জলাশয় সংস্কার করা হয় এলাকাবাসীর গণসাক্ষর গ্রহণ পূর্বক ও মতামতের ভিত্তিতে। অপরদিকে জলাশয় সংস্কারে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কোন সম্পৃক্তাতা নেই। অভিযোগটিও সম্পূর্ণ মিথ্যা। কিন্তু পরিবেশ অধিদপ্তরের উক্ত অভিযোগ পরবর্তীতে নিয়মিত মামলা হিসেবে আদালতে রুজু হয়। গত ১০ আগস্ট অভিযুক্তরা মামলার বিষয়ে জানতে পেরে আদালতে আত্মসমর্পণ করতে গেলে আদালত জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে তাঁদের জেল হাজতে পাঠান। আমরা তাঁদের সামাজিক স্বার্থে কাজ করতে গিয়ে মামলার আসামী করার প্রতিবাদ জানাই এবং অবিলম্বে তাঁদের মুক্তির দাবী জানাই।